Header Ads

"ভিনগ্রহে কী সত্যি প্রাণী আছে"??




এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী নামটির কথা হয়তো অনেক আগে থেকেই অনেকে জেনে থাকবেন। এখন প্রশ্ন হলো ভিনগ্রহে বা এই বিশ্বে সত্যি কি এলিয়েন নামের প্রাণী আছে?

পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত প্রাণী মানুষ কি কখনোই এলিয়েনের সাক্ষাত পাবে? এমন কিছু প্রশ্ন অনেকের মনে হয়ে থাকে। এই বিশ্বে এলিয়েন যেকোনো পরিস্থিতিতে জন্মগ্রহণ করতে পারে, যা বিজ্ঞানের অনুসারে নাও হতে পারে কারণ বিশ্বকে নিয়ে বিজ্ঞান ততটা উন্নত নয় যতটা পৃথিবীকে নিয়ে। প্রাণী জন্মানো নিয়ে বিজ্ঞান অনেক আলোচনা করেছে। এরকমের কোনো কারণ নেই যে পৃথিবীর বাইরে জীবন থাকতে পারে না। যেসব উপাদান জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় তা শুধু পৃথিবীতেই থাকবে এমনটাও সম্ভব না। কারণ আমাদের ইউনিভার্সে অনেক অনেক গ্যালাক্সি রয়েছে,এবং সেই গ্যালাক্সি তে রয়েছে সূর্যের মতো অনেক নক্ষত্র, লক্ষ লক্ষ গ্রহ, উপগ্রহ। তো এটা স্বাভাবিক যে পৃথিবীর মতো প্রকৃতি কোনো না কোনো গ্রহে আছে। সেটা খুঁজে পাওয়া কঠিন বা অসম্ভব হতে পারে কিন্তু সেই গ্রহের অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না।

এলিয়েন খোঁজার আগে সবাইকে জানতে হবে কী কী পদার্থ বা উপাদান প্রয়োজন একটি গ্রহে জীবের জন্মানোর জন্য। ভৌত বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান এবং জীব বিজ্ঞান অনুসারে মহাকাশে জীব থাকার ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ৩টি পদার্থ হলোঃ জল, কার্বন ও ডিএনএ। বিজ্ঞানীরা বলেছেন কোনো গ্রহে প্রাণী থাকতে হলে সর্বপ্রথম থাকতে হবে তরল রুপে জল। কারণ জলেই সবচেয়ে বেশি রসায়ন মিশতে পারে অন্যসব তরলের তুলনায়। তরল রুপে জলকেই সবচেয়ে সহজ মানা হয় জটিল অনু তৈরির ক্ষেত্রে। এই কারণেই বিজ্ঞানীরা মানেন যে, এই বিশ্বে এলিয়েন খুঁজতে হলে সবার আগে অন্য গ্রহে জলকে খুজতে হবে।

দ্বিতিয়ত দেখতে হবে সেই গ্রহে কার্বন অবস্থিত কিনা, কারণ কার্বন জলের সাথে মিশে জটিল অনু তৈরি করতে সক্ষম। তৃতীয়ত হলো ডিএনএ, "DNA" হলো এমন অনু যা নিজেই নিজের প্রতিকৃতি বানাতে পারে। ডিএনএ কার্বনের সাথে মিশে সহজেই জটিল অনু সৃষ্টি করতে পারে। বাকি অনুরা এটা করতে সক্ষম কিনা তা বিজ্ঞানের পক্ষে এখনো জানা সম্ভব হয়নি। বিজ্ঞানীদের মতে জল, কার্বন এবং ডিএনএ যে শুধু পৃথিবীতেই রয়েছে এটা ভাবা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বিজ্ঞানীরা জল থাকার সম্ভাবনা কোনো কোনো গ্রহে আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন, আবার কোনো কোনো গ্রহে কার্বনও পেয়েছে। কিন্তু মহাকাশে অসংখ্য গ্রহ ও নক্ষত্র  রয়েছে তাদের প্রত্যেককে এখনো আবিষ্কার করতে পারেনি বিজ্ঞান। আর এলিয়েন এই মহাকাশে রয়েছে এই দাবি কে আরও স্পষ্ট করেন ১৯৬১ সালে ফ্রাঙ্ক ড্রেক, সবার প্রথমে এমন একটি সমীকরণ আবিষ্কার করেন যার সাহায্যে গণনার মাধ্যমে জানা যায় বিশ্বে পৃথিবীর বাইরে প্রাণী আছে। যাকে ড্রেক সমীকরণও বলা হয়। ড্রেক সব তথ্যের ভিত্তিতে জানার চেষ্টা করে কোথায় কোথায় জীবন থাকতে পারে পৃথিবীর বাইরে।

আমাদের মিলকিও গ্যালাক্সিতেই রয়েছে হাজারো এমন গ্রহ যেখানে জীবন থাকাটা সম্ভব। কিন্তু এই সমীকরণকে ৪০ বছর পরে ২০০১ সালে বিজ্ঞানীরা আরও আপডেট করে পায় হাজারেরও বেশি নয়, লক্ষেরও বেশি এমন গ্রহ আছে যেখানে জীবন থাকার সম্ভাবনা প্রবল। অর্থাৎ এটা সত্যি যে পৃথিবী ছাড়াও প্রাণী রয়েছে এই মহাকাশে। তবে সেই প্রাণীর আঁকার-আকৃতি আমরা যা কল্পনা করি তার থেকে ব্যতিক্রমও হতে পারে। কীট-পতঙ্গ, পোকা-মাকড়, জীব-জন্তুও হতে পারে। তাই এটা বোঝা যায় যে এলিয়েন রয়েছে মহাকাশে। কিন্তু প্রশ্ন হলো তারা কি কখনো এই পৃথিবীতে আসবে? বিজ্ঞানীরা উন্নত এলিয়েনের খোঁজেই আগ্রহী। বিজ্ঞান যুগের পর যুগ নিজেকে আপডেট করে চলেছে, কেপলার এর মতো যন্ত্রকে পাঠিয়ে অন্যান্য গ্রহের খোঁজ নিচ্ছে। তবে তা সীমিত, যা আমাদের এই মিলকিও গ্যালাক্সির খুব কম,বলা যেতে পারে ০.০১% গ্রহকেই খুঁজতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের এই পৃথিবীতে বিজ্ঞানের খোঁজ বার্তা মানুষ, তাই আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে এডভান্স প্রাণী, আর তা হওয়া সত্ত্বেও আমাদের মহাকাশের উপর রিসার্চ সিমিত। কিন্তু তারা বহু আলোকবর্ষ দূরে থাকা সত্ত্বেও আমাদের খোঁজ করতে পারে।

যারা আমাদের পৃথিবীর খোঁজ করতে পারে বহু আলোকবর্ষ দূরে থাকা সত্ত্বেও তাদের টেকনোলজি আমাদের পৃথিবীর টেকনোলজি থেকে কয়েক কোটি গুণ উন্নত। মানুষ যেমন কখনো পিঁপড়ের খোঁজ করতে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিবে না তেমনই যেসব এলিয়েন পৃথিবীতে পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে,তাদের কাছে পৃথিবী এবং আমাদের কোনো মূল্যই নেই। তাঁরা এতটাই উন্নত যে তারা চাইলেই সমগ্র পৃথিবীর যেকোনো জিনিস নিমিষেই নিজেরাই তৈরি করে নিতে পারে। আর তাদের কাছে এসব কাজ করার জন্য হাজারো রোবট থাকবে। আর রইলো পৃথিবীর সভ্যতা, সেগুলো তাদের কাছে শুধুমাত্র পিঁপড়ের সভ্যতার মত সভ্যতা। আমরা তাদের কাছে শুধুমাত্র নিকৃষ্ট আদিবাসী মানুষ, অর্থাৎ এডভান্স এলিয়েন এই গ্রহের কোনো বিষয়েরই প্রতি আগ্রহ পোষণ করবে না। এলিয়েনরা পৃথিবীতে আসতে চাইলে তাদের লক্ষ লক্ষ বছর লেগে যাবে যদিও তারা আলোকগতিতে ছুটে আসে প্রিথিবিতে।

আর এত পরিশ্রম কি তারা করবে এই পিঁপড়ের মত সভ্যতা আবিষ্কারের জন্য। কিন্তু এসব জানার পরেও বিজ্ঞানীরা নিরাস হয় না, কারণ এলিয়েন পৃথিবীতে আসার আরেকটি শর্টকাট আছে, যেটি ওয়ার্মহোল নামে পরিচিত। ওয়ার্মহোল যেকোনো বস্তুকেই অন্য একটি গ্রহে বা গ্যালাক্সিতে নিমিষেই পৌঁছে দিতে পারে। যারা এলিয়েন দেখার দাবি করে গেছে তাদের মতে এই ওয়ার্মহোলের মাধ্যমেই এলিয়েন পৃথিবীতে এসেছিলো।

No comments

Powered by Blogger.