পৃথিবীতেই নরকের দরজার অবস্থান।। পড়ুন বিস্তারিত.........
স্বর্গ এবং নরকের কথা শুনেনি এমন খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর। আর স্বর্গ এবং নরকের দর্শন পেয়েছেন এমন মানুষ খুঁজতে যাওয়াটাই নিতান্ত হাস্যকর। তবে পৃথিবীতেই এমন এক জায়গা আছে যেখানে গিয়ে আপনি নরক দেখার সুযোগ পাবেন। কি ব্যাপারটি আপনার কাছে হাস্যকর মনে হচ্ছে? হাস্যকর মনে হলেও এটাই সত্যি।
এমন একটি জায়গা আপনি খুঁজে পাবেন তুর্কেমেনিস্তানে ডারভোযা নামক এলাকায়। এটি একটি গ্যাস খনির জ্বলামুখ, যেখানে নরকের মতো দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। কাকারু মরুভূমির মাঝখানে অবস্থিত গ্যাসের এই জ্বলমুখের স্থানীয় লোকেরা নাম দিয়েছে "Door to Hell" বা নরকের দরজা।
১৯৭১ সালে সোভিয়েতরা নরকের দরজাটি উন্নুক্ত করেন। ৪৪ বছর পর আজও সেই দরজা খোলা আছে। তুরকেমেনিতানের দারুত্রইজে একটি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র তৈরি করার সময় তা ভেঙে পরে এবং একটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। সোভিয়েত ভূ-তাত্ত্বিক গণ যখন মিথেন গ্যাস দূর করার জন্য ওখানে আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করেন কিন্তু তাদের পরিকল্পনা কোনো কাজে আসেনি। কারণ আজও পর্যন্ত সেখানে আগুন জ্বলছে।
দারুত্রইজের ৩৫০টি গ্রামের লোকেরা ওই জায়গাকে নরকের দরজা বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রায় ২.৫ বর্গমাইল দূরত্ব থেকে এর আগুনের শিখা দেখা যায়। নরকের দরজার স্থানটি একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
নরকের দরজাটি অর্থাৎ গর্ত টি ২০০ ফুট চওড়া এবং ৭০ ফুট গভীর।তুর্কেমেনিস্তানের সভাপতি গুভাঙ্গলি ভারডি হামিতু ২০১০ সালে এই গর্তটি বন্ধ করার আদেশ দেন কিন্তু তখনও এই দরজাটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। সেখানে এই নরকের দরজা ৪৪ বছর ধরে জ্বলছে।
২০১০ সালের এপ্রিলে তুর্কেমেনিস্তানের রাষ্ট্রপতি গ্যাস্কক্ষেত্রটি পরিদর্শন করেন এবং এটি বন্ধ করার কথা বলেন। তিনি বলেন এই গ্যাসক্ষেত্র টি বন্ধ না করলে ওই এলাকার অন্যান্য প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উপর এর প্রভাব পরতে পারে।
বর্তমানে তুর্কেমেনিস্তানে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে। বর্তমানে ৭৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার থেকে গ্যাস উত্তোলন করে ভারত,রাশিয়া,চীন,ইরান ও পশ্চিম ইউরোপে পরবর্তী ২০ বছর তারা রপ্তানি করার চিন্তা করছে।
"Door To Hell" অথবা নরকের দরজা নামক স্থানটি ভয়ঙ্কর সুন্দর লাগে রাতে। তখন অনেক দূর থেকেই আগুনের শিখার উজ্জ্বলতা ভালোমতো বুঝা যায়। সেখানকার উত্তাপ এত বেশি যে কেউ চাইলেও ৫ মিনিটের বেশি সেখানে থাকতে পারবে না।
No comments